দুধ ফেটে যাওয়া নিয়ে আমাদের সংশয়ের সব উত্তর
গুড় ভেজাল হলেই নাকি দুধ কেটে যায়...!আর ভেজাল গুড় ছাড়া নাকি দুধ কখনই কাটবেনা। অনেক মানুষ আজ এই ধারণায় বিশ্বাসী।আর এই ভূল প্রচারণাটা বেশি বেশি করছি আমরা যারা কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অনলাইন ব্যবসায়ী আছি তারাই।আমি জোর দিয়ে বলছি এটা একটা ভূল ধারণা।
নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে গুড়ের ভেজাল বলতে আমি যা যা বুঝি সেগুলো হলো চিনি,রং, হাইড্রো, ময়দা। আর এগুলোর কোনটাতেও দুধ কাটে না।এখন আপনারাই বলেন.. চিনি দিয়ে দুধ জাল করলে কি দুধ কাটে..? রং তো অনেক খাবারকেই আকর্ষণীয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়...হয় না..? ময়দায় কি দুধ কাটে..? শুনেছি মিষ্টির দোকানে বিভিন্ন মিষ্টি তৈরি করতেও হাইড্রোজ ব্যবহৃত হয়..!
এই জিনিসগুলোতে যে দুধ কাটেনা এটা আমি বাজার থেকে ভেজাল গুড় এনে সকলের সামনে দুধ জাল করে প্রমান করে দিতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমি বলছিনা যারা এই জিনিসগুলো দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করছে তারা খুব ভালো কাজ করছে।কিন্তু আমি এটা বোঝাতে চাচ্ছি যারা মনে করেন ভেজাল গুড়ে দুধ কেটে যায় তারা ভুল ধারণা লালন করছেন।
এখন বাকি থাকলো চুন রস যাতে ঘোলা না হয়ে যায় তাই সব গাছিকেই মাটির হাড়িতে চুন দিতে হয়।এটাকে ভেজাল বলা হয় না এটা রস ভালো রাখার প্রক্রিয়া।নয়তো শীতের পরিমাণটা একটু এদিক- ওদিক(কম-বেশি) হলেই রস বাংলার তাড়িতে পরিণত হবে।তবে কেউ কেউ চুনের পরিবর্তে ফিটকারী ব্যবহার করেন এটা ঠিক না।চুনে দুধ কাটেনা তবে ফিটকারী দিলে দুধ কাটতে পারে।
আবার শীত কম পড়লে অনেক কিছু দেবার পরেও রস ঘোলাটে( হালকা টক টক) হয় আর এই ঘোলাটে রস থেকে তৈরি গুড়ে দুধ কেটে যেতে পারে।রস জাল করতে একটু দেরি করে ফেললেও রস টক হয়। আর এই গুড় দিয়ে সরাসরি দুধ জাল করলেও দুধ ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে।এক্ষেত্রে সমাধান হলো👇
গুড়টাকে প্রথমে হালকা পানি দিয়ে সিরা করে তা ঠান্ডা করে নিন।দুধ দিয়ে পিঠা তৈরি শেষে চুলার জাল বন্ধ করে গুড় মেশান।পায়েস রান্নার একদম শেষ পর্যায়ে গুড়ের ঘন সিরাটা দিয়ে নেড়ে নেন।এভাবে দুধ কাটবেনা ইনশাআল্লাহ।
আমি বলব দুধ কাটার পেছনে আবহাওয়া পরিবর্তন ও গাছির কারিগরি দক্ষতার অভাব থাকতে পারে।আবার যে অনঅভিজ্ঞ রাধুনি পিঠা- পায়েস তৈরিতে ভুল পদ্ধতি গ্রহণ করেন তার সমস্যার কারণে ফাটতে পারে।ভেজালের কারণে ফাটে না।
আরে ভাই আপনাদের একটা বিষয় কেন মাথায় আসেনা।যেখানে বাংলাদেশ ভেজাল খাদ্য দিয়ে ভরেগেছে।চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও মাঝে মাঝে এই ভেজালগুলো সনাক্ত করা দুষ্কর হয়ে যায়।আর সামান্য এই দুধ দিয়ে গুড়ের ভেজাল পরিক্ষা করছেন...!তাহলে আর ল্যাবের দরকারী হতো না...!